সম্পাদকীয় নোট: আগস্ট বিদ্রোহের এক যুগ। ২০০৭ সালে সেনাকর্তৃত্বের জরুরি শাসনকে চ্যালেঞ্জ করতে সক্ষম হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। যে অল্প ক‘জন শিক্ষক সেই জরুরি শাসনকে ক্রিটিক্যালি দেখতে পেরেছিলেন সেলিম রেজা নিউটন তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য। ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ চলবে না’- এই উচ্চারণকে ধারণ করে প্ররতিবাদী মৌন মিছিল করার দায়ে তিনিসহ তাঁর সহকর্মিদের আটক করা হয়। জরুরি আইন ভঙ্গের দায়ে কারাদণ্ড দেয়া হয় তাঁদের। অতঃপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাঁদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয় ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন সরকার। কারামুক্তির পর ক্ষমতা-কর্তৃত্ব- রাষ্ট্র-সমাজ-কারাগার-বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি নিয়ে বিপুল পরিসরে রচনা শুরু করেন সেলিম রেজা নিউটন, যা এখনও চলমান। তাঁর অচেনা দাগ গ্রন্থের তৃতীয় দাগে জরুরি শাসন সংক্রান্ত রচনা সংকলিত হয়েছে। আগস্ট বিদ্রোহের যুগপূর্তিতে অরাজ ধারাবাহিতভাবে তা প্রকাশ করছে।
রাজনীতি নিয়ে জনগণের নির্লিপ্ততা
অন্যত্র বলেছি, ২০০৬ সালের অক্টোবর-মহাসংকটের সবচেয়ে বড় ঘটনা হচ্ছে এই যে, শাসকশ্রেণীর নানান অংশের রাজনৈতিক ক্ষমতা ভাগ-বাটোয়ারা সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ড থেকেই জনসাধারণ নিজেদেরকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। এটা কিন্তু শুধু ২০০৬ সালেরই নয়। এ আমাদের স্বাধীনতা-পরবর্তী যুগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পূর্বাপর বৈশিষ্ট্য। লক্ষণীয় হলো, শাসকশ্রেণীর কাছ থেকে জনগণের এই আপাত দূরত্ব খোদ রাজনীতি সম্পর্কে তাঁদের সুচিন্তিত নির্লিপ্ততারই নামান্তর।
এর ব্যাখ্যা কী? ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত পাক্কা ষোল বছর প্রায় পূর্ণ সময় ধরে একটি বামপন্থী রাজনৈতিক দল করার সুবাদে আমার কমরেডদের মতো করে আমিও মনে করতাম, রাজনৈতিক দল যারা করেন না, তাঁরা দ্বিতীয় শ্রেণীর জীব। আপামর সাধারণ মানুষ যে আসলেই রাজনৈতিক দলগুলোকে পছন্দ করছেন না, সেটাকে আমরা মনে করতাম তাঁদের অজ্ঞতা এবং সাম্রাজ্যবাদীদের প্রচারণার ফল। কেতাবি তত্ত্ব, বুলিবাগিশি বক্তৃতা এবং এক প্রকার অন্ধ আন্তরিকতার বাইরে বাস্তব পার্টি-জীবনের নানান রকম অজস্র খটকা থেকে হোঁচট খেয়ে দীর্ঘ বেদনাদায়ক চিন্তা-অনুসন্ধান-অনুশীলনের প্রক্রিয়ায় অবশেষে দেখা গেল, রাজনীতির ধারণার মধ্যেই আছে গোড়ার গলদ।
বাংলাদেশের মানুষ আমাদের জাতি-রাষ্ট্র গঠন-প্রক্রিয়ার লম্বা পথ অনুসরণ করতে করতে কোনো না কোনোভাবে এই গলদ টের পেয়েছেন। ফলে তাঁরা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করা পর্যন্তও রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যেরকম একাত্মতা বোধ করেছেন, স্বাধীন বাংলাদেশে তাঁদের অভিজ্ঞতা রাজনৈতিক দল সম্পর্কে যাবতীয় মোহভঙ্গের বেদনায় বিপন্ন।
রাজনীতি হচ্ছে আধিপত্যের আর্ট
লম্বা-চওড়া লেকচার বাদ দিয়ে শাদা চোখে তাকিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, ‘রাজনীতি হচ্ছে রাষ্ট্রকর্মের ভেতর আর বাহির–উভয় দিককার কার্যকলাপ এবং তার সুস্পষ্ট অভিপ্রকাশ। অর্থাৎ, বিশেষাধিকারপ্রাপ্ত শ্রেণীসমূহের সপক্ষে আমজনতাকে শোষণ করার এবং তার উপর আধিপত্য চালানোর আচার-অনুষ্ঠান-অনুশীলন তথা আর্ট এবং বিজ্ঞানের নাম রাজনীতি।’ (মিখাইল বাকুনিন, ‘রাষ্ট্র ও রাজনীতি’, ১৮৭১) সমাজে বিদ্যমান কুৎসিৎ অর্থনৈতিক বৈষম্য তথা কোটি কোটি মানুষকে পাশবিক মনুষ্যত্বহীন জীবন যাপন করতে বাধ্য করার বর্তমান আর্থ-সামাজিক-বুদ্ধিবৃত্তিক পদ্ধতিটিকে টেলিভিশন আর গ্ল্যামারের আড়ালে সুন্দর করে টিকিয়ে রাখা এবং এই টিকিয়ে রাখার বিরুদ্ধের শক্তি-চিন্তা-মতামত-কর্মতৎপরতাগুলোকে দমন-পীড়ণ-নিশ্চিহ্ন করার আয়োজন-বন্দোবস্তেরই অপর নাম রাজনীতি। ‘ইতিহাসে অর্থনৈতিক শোষণ সবসময়ই রাজনৈতিক আর সামাজিক দমন-পীড়নের হাতে হাত রেখে এগিয়েছে। মানুষ কর্তৃক মানুষকে শোষণ আর মানুষের ওপর মানুষের শাসন-নিয়ন্ত্রণ অবিচ্ছেদ্য, এবং এদের একটা আরেকটার পূর্বশর্ত।’ (হুডল্ফ হকার, ২০১১) রাজনীতি সংক্রান্ত গোড়ার গলদটা এইখানে।
ক্ষমতা-ভাগাভাগির সংকট ও জরুরি গণতান্ত্রিক ঐকতান
রাজনীতি আসলে কতিপয়ের হাতে কেন্দ্রীভূত সম্পদ এবং কর্তৃত্বপরায়ণ রাষ্ট্র-ক্ষমতার ভাগাভাগির বিন্যাসও বটে। কারা কীভাবে কতটা সম্পদ এবং ক্ষমতার মালিক হবে এবং হতে পারবে তার ফয়সালাই রাজনীতি। আওয়ামী লীগ বিএনপি জামাত জাপা এই ফয়সালা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছিল। এই ব্যর্থতারই নাম অক্টোবর-মহাসংকট: মাৎস্যন্যায়-পর্ব। আর এ ব্যর্থতা দূর করে নতুন রাজনৈতিক ফয়সালা প্রতিষ্ঠা করার মিশনই ১১ই জানুয়ারির সরকারের প্রকৃত মিশন।
মিশন শুরু হলো নবপর্যায়ের প্রচারণা-প্রক্রিয়া দিয়ে: আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্রযন্ত্র, সুশীল সমাজ, সামরিক প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং বৈদেশিক / নয়া-ঔপনিবেশিক শক্তি-গুলোর যৌথ / ঐকতানমূলক প্রচারণা-প্রকৌশল। অন্যদিকে শুরু হলো আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্রশক্তির একচেটিয়া কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক মাত্রায়। একটু গুছিয়ে বলতে চাইলে, মূলত তিনটা প্রক্রিয়া-প্রপঞ্চকে বোঝা প্রয়োজন: (এক) বহুলনন্দিত আইনের শাসন কায়েমের প্রক্রিয়া, (দুই) কর্তৃত্বপরায়ণ রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বাত্মক-স্বৈরতন্ত্রী হয়ে ওঠার প্রবণতা এবং (তিন) রাষ্ট্রীয়-কর্পোরেট যৌথ প্রচারণা-প্রকৌশলের ঐক্য ও টানাপোড়েন।
এই প্রক্রিয়া-প্রপঞ্চগুলোই জরুরি জমানার রাজনৈতিক হৃৎস্পন্দনের আসল স্মারক। জরুরি আইনের নিজেরই যে একটা রাজনীতি আছে সেটা আড়াল করতেই সামগ্রিক প্রচারণা-যজ্ঞ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের মাধ্যমে উপযুক্ত সহযোগী তথ্যমাধ্যম গড়ে তোলা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত। বাংলাদেশেও দেখা গেল, মিডিয়া নিজেও উপর্যুপরি দাবি করেছে, কর্তাদের মনে করিয়ে দিয়েছে, ১১ই জানুয়ারির সরকার শুধু ‘সেনাসমর্থিত’ই নয়, সুশীল সমাজের ‘মিডিয়া-সমর্থিত’ও বটে।
আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্রযন্ত্র, সুশীল সমাজ, সামরিক প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং বৈদেশিক / নয়া-ঔপনিবেশিক শক্তিগুলোর উপরোক্ত এই ‘যৌথবাহিনী’র ঐকতান সৃষ্টি হওয়াটা মনোযোগের দাবি রাখে। অধুনাবিলুপ্ত গণসাহায্য সংস্থার কর্ণধার মাহমুদুল হাসান নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে যখন সাড়ম্বরে সুলিখিতভাবে সুশীল সমাজের তত্ত্ব হাজির করেন, তখন থেকেই সুশীল সমাজের প্রধানতম গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞাটির অন্তর্ভুক্ত ছিল এই মানদণ্ড যে, রাষ্ট্রযন্ত্র, রাজনৈতিক দল এবং সামরিক বাহিনীর বাইরের সমাজ হচ্ছে সুশীল সমাজ। এখন উপযুক্ত পরিপক্ক সময়ে সংজ্ঞটি ডিগবাজি খেল এবং তাঁদের স্বরূপ বোঝা গেল যখন তাঁরা বৈদেশিক / নয়া-ঔপনিবেশিক শক্তিসমূহের ছত্রছায়ায় ঐ রাষ্ট্রযন্ত্র আর সামরিক বাহিনীর সাথে মিলেমিশেই একটি জরুরি গণতান্ত্রিক ঐকতান সৃষ্টি করলেন। এই হচ্ছে সুশীল সমাজের রাজনীতির প্রাণভোমরা। এই রাজনীতির সারবত্তা উপলব্ধি করতে তথাকথিত ‘রাজনৈতিক সরকার’ এর বিরুদ্ধে বিষোদ্গারের বৈপরিত্য ও অন্তর্দ্বন্দ্ব-
সমূহের স্বরূপ উপলব্ধি করা দরকার।
ক্ষমতা ও সম্পদের নিওলিবারাল বিন্যাস
রাজনীতি আদতে কী বস্তু আগেই বলেছি। রাজনীতি মানে স্রেফ রাজনৈতিক দল এবং তাদের কর্মকাণ্ড নয়। আওয়ামী লীগ বিএনপি জামায়াত জাতীয় পার্টি বিদায় নিলেই রাজনীতি বিদায় নেয় না। বিদ্যমান একচ্ছত্র একপেশে প্রচার-প্রচারণার ভাব দেখে মনে হয় সাংবাদিক, আইনজীবী, শিক্ষক, সামরিক অফিসার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার সকলেই ভালো, শুধু রাজনীতিবিদরা খারাপ। রাজনীতিবিদদের প্রতি কোনো বিশেষ সহানুভূতি থেকে কথাটা বলছি না। আমার কাছে রাজনীতি মানেই শাসন। আমি খোদ রাজনীতিরই উচ্ছেদ চাই। আমার বিশ্বাস, জনগণও তাই চান।
রাজনীতির বদলে আমি চাই সুসংগঠিত মানুষের সত্যিকারের আত্মনিয়ন্ত্রণ। কোনো পেশাদার বা অপেশাদার শাসকগোষ্ঠীরই অধিকার নেই মানুষের জীবন নিয়ন্ত্রণ করার। আমি তাই চাই রাজনীতিক শাসন-প্রক্রিয়ার জায়গা নিক অর্থনৈতিক-সামাজিক জীবন-কর্মে নিয়োজিত শ্রমিক-কৃষক ও সাধারণ মানুষদের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধিদের সমাজ-জীবন-পরিচালন-প্রক্রিয়া। কিন্তু জরুরি জমানার হর্তাকর্তারা তো আসলে রাজনীতিকে উচ্ছেদ করতে চান না। তাঁরা চান বিশেষ ধরনের রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে। তাঁরা চান ‘নতুন’ ধারার কর্পোরেট-রাজনৈতিক কতিপয়-গোষ্ঠীর কাছে ক্ষমতা ও সম্পদ বিন্যস্ত করার নব-বন্দোবস্ত। এই বন্দোবস্ত রক্ষা করবে জনসাধারণের শ্রম ও ভূপ্রকৃতির সম্পদ লুণ্ঠনকারী বহুজাতিক বাণিজ্যসঙ্ঘসমূহের স্বার্থ, জীবনবিধ্বংসী ইঙ্গ-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থ এবং তাদের এদেশীয় প্রশাসনিক-ব্যবসায়িক-সামরিক-সাংস্কৃতিক পার্টনারদের যাবতীয় স্বার্থ। এটাই সুশীল সামরিক জরুরি জমানার রাজনীতি।
রাজনৈতিক প্রচারণা কৌশলসমূহ
রাজনীতির প্রচারণা-যন্ত্রের একটা মৌলিক কৌশল হলো আপনি যা করছেন বা করতে চাচ্ছেন সেটা না বলে ক্রমাগতভাবে উল্টো কথা বলুন, অজস্র মুখে, অজস্র ইশারায়। আপনি যখন চাচ্ছেন রাজনীতিকে আপনার এবং আপনার রাজনৈতিক মিত্রদের সপক্ষে নতুন করে ঢেলে সাজাতে, তখন আপনাকে অনর্গল বলে যেতে হবে যে: আপনার সরকার অরাজনৈতিক সরকার, বলতে হবে যে, রাজনীতির বিরুদ্ধে জেহাদ করাকেই আপনি আপনার কর্তব্য বলে ঠিক করেছেন।
প্রচারণার আরেকটা প্রাথমিক কৌশল হলো, যাকে আপনি ঘায়েল করতে চাচ্ছেন তাকে আগে গালাগালি করুন, তাকে একটা খারাপ নাম দিন। বিগত ১৫-১৬ বছর ধরে পুরোনো পর্যায়ের প্রচারণা-প্রকৌশলে সুশীল সমাজ এই কাজটাই করেছিল: রাজনীতিবিদরা খারাপ, তাঁরা অমুক তাঁরা তমুক, অন্তহীন সম্প্রচার। ১১ই জানুয়ারির নবপর্যায়ে এসে সেটা তীব্রতম মাত্রা অর্জন করল। এতে আরেকটা লাভ হচ্ছে, আপনার নিজেকে নিজে ভালো বলতে হলো না। রাজনীতিবিদরা খারাপ মানেই তো, তাদেরকে যারা দমন করছে তারা ভালো।
প্রচারণার অপর প্রধান কৌশলটা হচ্ছে আপনার একটা জাতীয় গণশত্রু বা জুজুবুড়ি লাগবে। ঐ জুজুবুড়ির ভয় দেখিয়ে আপনি সমস্ত ‘বাচ্চাকাচ্চা’কে সাইজ করতে পারবেন। কেউ বেশি বেয়াদবি করলে তাকে ঐ জুজুরই চ্যালা হিসেবে আখ্যায়িত করবেন এবং চাইলে তা আদালতের মাধ্যমে প্রমাণেরও চেষ্টা করবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আশির দশক পর্যন্ত এরকম জুজুর নাম ছিল রুশ কমিউনিজম, ‘লাল আতঙ্ক’ (যদিও বাস্তবে তা সমাজতন্ত্রই ছিল না, বাস্তবে ছিল একদলীয় রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদ), পরে নব্বই দশক থেকে বুড়ির নতুন নাম হয়েছে ‘ইসলামী সন্ত্রাসবাদ’ (যদিও বাস্তবে ওসামার মাধ্যমে সারা দুনিয়ার ‘ইসলামী সন্ত্রাসী’কে আফগানিস্তানে জেহাদের দাওয়াত দিয়ে ডেকে এনে খোদ সিআইএ-র লালন-পালনে আল-কায়দা নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছিল)। ১১ই জানুয়ারির জরুরি সরকারপক্ষ এই জুজুবুড়ির নাম দিয়েছে ‘দুর্নীতি’ (পাকিস্তান ও থাইল্যাণ্ডেও ‘দুর্নীতি’-মডেলই হাজির করা হয়েছিল)। বলা হলো, দুষ্ট রাজনীতিবিদদের এবং তাদের সাঙ্গোপাঙ্গো-দল-পরিবার-আত্মীয়-স্বজনের দুর্নীতি দমন করার মাধ্যমেই সুষ্ঠু নির্বাচন করা হবে, বাংলাদেশ আর ১১ই জানুয়ারির আগে ফিরে যাবে না।
খারাপ গণতন্ত্র ভালো স্বৈরতন্ত্রের চেয়ে ভালো
শতমুখী প্রচারণার ঢক্কা-নিণাদের আড়ালে একটা জ্বলন্ত সত্য ছাই-চাপা পড়ার দশা হয়েছে আমার সংশয়: ১১ই জানুয়ারির সরকারের ‘দুর্নীতি দমন’ অভিযান গণতন্ত্র দমনের অভিযানও বটে। কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, সবচাইতে খারাপ গণতন্ত্রও সবচাইতে ভালো স্বৈরতন্ত্রের চেয়ে ভালো। এটুকু বুঝলে জরুরি জমানার রাজনীতি ও প্রচারণা-প্রকৌশল বোঝার একটা প্রধান চাবিকাঠি হাতে পাওয়া যাবে।
রাবি: জানুয়ারি ২০০৮। প্রকাশ: প্রবাসী বাঙালিদের অনলাইন পত্রিকা ইউকেবেঙ্গলি, লন্ডন, ২৪শে জুন ২০০৮।