- অনুবাদ: মোস্তাকিম হায়দার
চলমান করোনা মহামারীটির সংক্রমণ সমাজে সুপ্ত আরো কিছু ভাবাদর্শের ভাইরাসকে উসকে দিয়েছে যেমন- ভুয়ো খবর, ভ্রম-বাতুল ষড়যন্ত্রতত্ত্ব, বর্ণবাদের বিস্ফোরণ ইত্যাদি। কোয়ারেন্টাইনের সুপ্রতিষ্ঠিত ডাক্তারি প্রয়োজনের মাঝে ভাবাদর্শের পেষণে অঙ্কিত সীমানায় আমাদের পরিচয়কে হুমকিদানকারী শত্রুদের কোয়ারেন্টাইন করার প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়।
হয়তো আরো একটি হিতকারী ভাবাদর্শের ভাইরাস ছড়াবে এবং আশা করা যায় তা আমাদের সংক্রমিত করবে। যে ভাইরাসটি হবে বিকল্প এক সমাজ চিন্তার, জাতিরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বের এক সমাজ, এমন এক সমাজ যা নিজেকে বাস্তবায়িত করে বৈশ্বিক সংহতি এবং সহযোগিতায়। গর্ভাচেভের মতে চেরনবিল বিপর্যয় যেভাবে সোভিয়েত সাম্যবাদের পতনের সূত্রপাত করেছিল, সেভাবে করোনা মহামারীও চীনে সাম্যবাদী শাসনের পতন ঘটাতে পারে। এমন নানা জল্পনা-কল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এইখানে একটি প্যারাডক্স আছে। করোনা ভাইরাস আমাদের তাড়িত করবে সাম্যবাদের পুনরাবিষ্কারে; যার আস্থার ভীত প্রোথিত জনগণ ও বিজ্ঞানে ।
কুয়েন্টিন টারান্টিনোর কিল বিল-২ মুভির শেষ দৃশ্যে বেয়াট্রিক্স খলনায়ক বিলকে পরাহত করে মার্শাল আর্টের সবচেয়ে প্রাণঘাতী কৌশল ‘Five Point Plam Exploding Heart’ প্রয়োগ করে। এই কৌশলে লক্ষ্যবস্তুর শরীরের পাঁচটি স্পর্শকাতর স্থানে হাতের আঙ্গুলের শীর্ষ দ্বারা পাঁচটি আঘাত করা হয়। তার পরের পাঁচটি পদক্ষেপেই হৃদপিণ্ড শরীরের ভেতরেই বিদীর্ণ হয়ে লক্ষ্যবস্তু মেঝেতে ঢলে পড়ে। এমন কিছু কেবল মার্শাল আর্টের পুরাণেই ঘটা সম্ভব,বাস্তব হাতাহাতিতে মোটেই নয়। মুভিতে বেয়াট্রিক্সের অমন আঘাতের পর বিল স্থিরচিত্তে তার সাথে সমঝোতায় আসে এবং পাঁচটি পদেক্ষেপের পরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
এই কৌশলের সবচেয়ে চমকপ্রদ ব্যাপারটা হলো আঘাত এবং মৃত্যু-মুহূর্তের মাঝের সময়টুকু। যতক্ষণ পর্যন্ত স্থিরচিত্তে বসে আছি আমি চাইলেই যে কারো সাথে বাক্যালাপ জুড়ে দিতে পারি। তবে পুরো মুহূর্তেই আমার চেতনে আছে যে, যেই না আমি হাঁটতে আরম্ভ করবো হৃদপিণ্ড বিদীর্ণ হয়ে যাবে। যারা কল্পনা করছে যে এই ভাইরাস চীনা সাম্যবাদের পতন ঘটাবে তাদের চিন্তায় করোনা ভাইরাস চীনা সাম্যবাদী শাসনের উপর অনেকটা সামাজিক ‘Five Point Palm Exploding Heart Technique’ এর প্রয়োগ। চীনা নেতারা বসে,পর্যবেক্ষণ করে কোয়ারেন্টাইনের নৈমিত্তিক কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করতে পারেন। কিন্তু সামাজিক ব্যবস্থার (social order) যেকোনো লক্ষণীয় পরিবর্তন (যেমন-প্রকৃত অর্থেই জনগণে আস্থা) তাঁদের পতনের কারণ হতে পারে। আমার বিনয়ী অভিমতটি বেশ খানিকটা র্যাডিকাল শোনাবে। এই মহামারীটি আদতে আমাদের বৈশ্বিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থার উপর ‘Five Point Palm Exploding Heart Technique’ এর প্রয়োগ। সবকিছু যে তালে চলছিল, তা যে আর সম্ভব নয়, এ তারই আভাস অর্থাৎ একটি মৌলিক পরিবর্তন এখন আবশ্যক।
বেশ কয়েক বছর আগে, ফ্রেড্রিখ জেমিসন চলচিত্রে মহাজাগতিক কোন প্রলয়ের অসম্ভব্য সম্ভাবনায় প্রতি আমাদের নজর কেড়েছিলেন। যেমন- কোন উল্কাপিণ্ড পৃথিবীর জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়া কিংবা কোন ভাইরাস কর্তৃক মানব প্রজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া। এমন যেকোনো বৈশ্বিক বিপর্যয় প্রসব করে বৈশ্বিক সংহতির;যেখানে আমাদের তুচ্ছ পার্থক্যগুলো তাৎপর্যহীন হয়ে পড়ে। আমরা সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এর সমাধান খুঁজতে থাকি। আজ বাস্তবেই আমরা এমন কিছুর সামনে দাড়িয়ে। এটা আসলে যতক্ষণ আমাদের কাজে না আসছে ততক্ষণ বিকারগ্রস্ত ভাবে দুর্ভোগ উপভোগের কোনো আহ্বান নয়। বরং যে সমাজে আমরা বেঁচে থাকি তার মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে পুনঃচিন্তার জন্য, একটি মহা-বিপর্যয় যে জরুরী সেই পীড়াদায়ক সত্যেরই এক প্রতিফলন।
বৈশ্বিক সমন্বয়ের প্রথম ঊন নজির হলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যার কাছ হতে সারশূন্য কূটনৈতিক প্রলাপ শুনা না গেলেও উদ্বেগহীন সুস্পষ্ট সতর্কতা শুনতে পাচ্ছি। এমন সংস্থাকে আরো কার্যনির্বাহী ক্ষমতা দেয়া উচিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বার্নি স্যান্ডারস সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার সমর্থন করায় সংশয়বাদীদের বিদ্রুপের শিকার হয়েছিলেন। অথচ করোনা মহামারীটি আমাদের এই শিক্ষাই কি দিচ্ছে না যে আরো বেশি কিছু করা প্রয়োজন? আমাদের কি উচিত না একধরণের বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্কের কথা বিবেচনা করা? এক সংবাদ সম্মেলনে করোনার ব্যাপক বিস্তার এবং গণ কোয়ারেন্টাইনের প্রয়োজনীয়তাকে নাকচ করার পরদিনই ইরানের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ইরাজ হারিরছি একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে স্বীকার করেন যে,তিনি করোনা সংক্রমিত হয়েছেন এবং নিজেকে বিচ্ছিন্ন (Isolation) রেখেছেন (এমনকি টিভিতে তার জ্বর ও শারীরিক দুর্বলতার লক্ষণ বোঝা যাচ্ছিল)। হারিরছি আরো বলেছিলেন, “এই ভাইরাস ভীষণ গণতান্ত্রিক; এ ধনী-গরীব কিংবা কূটনীতিজ্ঞ-সাধারণ জনগণের মধ্যে কোন ভেদ-বিভেদ করে না”। এই বিষয়ে তিনি আসলে আগাগোড়াই সঠিক-আমরা সবাই এখন আসলে একই তরীর যাত্রী। অথচ যে বিষয়টি আমাদের সবাইকে এক সুতোয় গেঁথে বৈশ্বিক সংহতির নিশান উড়াচ্ছে সে বিষয়টিই প্রাত্যহিক জীবনে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়িয়ে চলতে এমনকি স্ব-বিচ্ছিনতার কথাও বলছে। এমন চূড়ান্ত বিদ্রূপ মিস করা কঠিন।
আমরা কেবলই এই ভাইরাল সঙ্কটের মোকাবেলা করছি না আরো মহাবিপর্যয় দিগন্ত হতে ধেয়ে আসছে অথবা বর্তমানেই নানা স্থানে তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে। খরা, তাপদাহ, প্রলয়ংকারি ঝড়- এই তালিকাটি আসলেই বেশ দীর্ঘ। এই সবক্ষেত্রেই জবাবটি উদ্বেগ বা আতঙ্কে নয় বরং কার্যকর বৈশ্বিক সমন্বয়ের জন্য দরকারি কঠিন এবং জরুরী কাজের মাধ্যমে দিতে হবে।
“এই মহামারীটি অতি দ্রুতই দমে যাবে। আমাদের অপেক্ষা করা উচিত এর চূড়ার (Peak) জন্য, তারপর জীবন আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।” ট্রাম্প কর্তৃক সাম্প্রতিক ভারত সফরের সময়ে প্রচারিত এই প্রচারের ফাঁদে হতে বেরিয়ে আসতে হবে। চীন অবশ্য এখনই তার প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে। তাঁদের সংবাদ-মাধ্যমগুলোতে এমন খবরও ভেসে বেড়াচ্ছে যে, মহামারী শেষ হয়ে গেলে পুষিয়ে নিতে সবাইকে শনিবার ও রবিবার কাজ করতে হবে। কিন্তু এইসব সরল আশার বিপরীতে দাড়িয়ে, এই সবকটি নেয়া জরুরী যে এই ভাইরাসটি এখানে থাকছেই। এই ধাক্কার ঢেউ মিলিয়ে গেলেও আরো নতুন ঢেউ আসতে পারে, হয়ত আরো ভয়াল মূর্তি ধারণ করে। সত্য হলো যে, যারা করোনার ভয়াল থাবা থেকে বেঁচে গিয়ে আরোগ্য লাভ করেছিলেন তারাই আবার করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এটা আসলেই এক অশনিসংকেত।
ঠিক এই কারণেই আমরা ধরে নিতে পারি যে এই ভাইরাল মহামারীটি আমাদের আশেপাশের মানুষ ও বস্তু, এমনকি আমাদের স্ব-শরীরের সাথের অনেক মিথস্ক্রিয়াতে প্রভাব ফেলবে। এসব থেকে পরিত্রান পাবার অনুশাসনের অভাব নেই। নোংরা জিনিস স্পর্শ করা হতে বিরত থাকা, কোন হুক স্পর্শ না করা, গণ শৌচাগার ব্যবহার না করা বা উন্মুক্ত কোন বেঞ্চে না বসা, আলিঙ্গন ও করমর্দন এড়িয়ে চলা… এবং বিশেষভাবে নিজের শরীরের নিয়ন্ত্রণ ও স্বতঃস্ফূর্ত অঙ্গচালনার ব্যাপারে সচেতন থাকা। নাক স্পর্শ করা বা চোখ রগড়ানো হতে বিরত থাকা… এক কথায় নিজের সাথে কোন খেলা না করা। অর্থাৎ কেবল রাষ্ট্র ও অন্যান্য এজেন্সিই আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে তৎপর নয়, আমাদের নিজেরও শেখা জরুরী কীভাবে নিজেদের আরো নিয়ন্ত্রিত ও সংযত রাখা যায়। সম্ভবত ভার্চুয়াল রিয়েলিটিই কেবল নিরাপদ বলে গণ্য হবে এবং উন্মুক্ত স্থানে অবাধে চলাচল অতি-ধনীদের অধিকারে থাকা দ্বীপগুলোর জন্যই সংরক্ষিত থাকবে।২
তবে আমাদের স্মরণ রাখা দরকার ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও ইন্টারনেটের স্তরে “ভাইরাস” এবং “ভাইরাল” শব্দগুলি বিগত দশকেও ওয়েব-স্পেসে ডিজিটাল ভাইরাসের সংক্রমণ বুঝাতেই ব্যবহৃত হত। যার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা (যেমন আমাদের প্রয়োজনীয় উপাত্ত ও হার্ড ড্রাইভের ক্ষতি করা) প্রায়শ ছড়িয়ে পড়ার পূর্বে আমাদের অজ্ঞাত থাকে। আমরা এখন যা প্রত্যক্ষ করছি তা আসলে আমূলে ঐ শব্দ যুগলের আক্ষরিক অর্থের প্রত্যাবর্তন। ভাইরাল সংক্রমণ আসলে ভার্চুয়াল ও বাস্তব দুই মাত্রায় হাতে হাত রেখে চলে।
আরেকটি উদ্ভট ঘটনা আমরা দেখতে পাচ্ছি, তা হলো পুঁজিবাদী সর্বপ্রাণবাদের উচ্ছ্বসিত প্রত্যাবর্তন। যেখানে বাজার ও আর্থিক মূলধনের মতো সামাজিক ব্যাপারকে জীবিত সত্তা হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। আমাদের প্রধান মিডিয়াগুলোতে চোখ বুলালে যে কেউ এই ধারণা পোষণ করতে পারে যে আমাদের আসলে যে বিষয়টি নিয়ে বিচলিত হওয়া উচিত তা হলো- “আমাদের বাজারে চলমান সঙ্কট”। কোনও ভাবেই যে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে বা সামনে আরো যারা মারা যাবে তাঁদের নিয়ে নয়। করোনাভাইরাস আমাদের বিশ্ব বাজারের মসৃণ পথচলাকে সার্বিকভাবেই বিঘ্নিত করেছে। এইসবই কি বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনর্গঠনের অপরিহার্যতার বার্তা দেয় না, যা আর বাজার ব্যবস্থার করুণার উপর ভর করবে না ? অবশ্য তাই বলে এখানে পুরানা ধাঁচের সাম্যবাদের কোন ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে না। শুধুমাত্র এমন একটি বৈশ্বিক ব্যবস্থার কথা ভাবা কি যায় যা অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রিত ও নিয়মাধীন রাখবে, সেই সাথে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে জাতিরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের লাগাম টেনে ধরবে। রাষ্ট্রসমূহ যুদ্ধকালীন সময়ে এটি করতে সফল হয়েছিল এবং কার্যতই আমরা এখন এক চিকিৎসা যুদ্ধের দিকেই অগ্রসর হচ্ছি।
এই মহামারীটির কিছু ভালো দিক আমাদের নিঃসঙ্কোচে স্বীকার করা উচিত। এই মহামারীটির মনে রাখার মতো এক প্রতীকী মুহূর্ত হলো প্রমোদতরীতে আটকে পড়া যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইন। আমার মতে প্রমোদতরীর এমন বেহায়াপনা হতে উৎকৃষ্ট অব্যাহতি। তবে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে নিঃসঙ্গ দ্বীপ বা রিসোর্টসমূহ যেন ধনীদের একচেটিয়া বিলাসে পরিণত না হয়; ঠিক কয়েক দশক পূর্বে উড়োজাহাজ ভ্রমণ যেমনটি ছিল। বিনোদনের নানা পার্কগুলো ভূতুড়ে নগরে পরিণত হয়েছে… চমৎকার! ডিজনিল্যান্ড থেকে বিরক্তিকর ও নীরস কোন স্থানের নাম আমার মাথায় আসে না। ব্যক্তিগত গাড়ির উৎপাদনও ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে- অসাধারণ! এই পরিস্থিতি হয়তো ব্যাক্তিগত পরিবহণ নিয়ে আমাদের অতিউচ্ছ্বাসের বিকল্প চিন্তা করতে বাধ্য করবে। এই তালিকা আসলে বাড়তেই থাকবে।
সাম্প্রতিক এক বক্তৃতায় ভিক্টর ওরবান বলেছিলেন, “উদারপন্থী বলে আসলে কিছু নেই। একজন উদারপন্থী ডিপ্লোমাধারী এক সাম্যবাদী ভিন্ন আর কিছু নয়”। এর বিপরীত নির্বচনটি সত্য হলে কেমন হবে? আমাদের স্বাধীনতার প্রতি যত্নশীলদের যদি আমরা “উদারপন্থী” হিসেবে অভিহিত করি এবং “সাম্যবাদী” হিসেবে তাদের যারা জানে (এই বৈশ্বিক পুঁজিবাদের সঙ্কটের মাঝে) কেবলমাত্র কিছু মৌলিক পরিবর্তনেই ঐসব স্বাধীনতা রক্ষা করা সম্ভব। যেহেতু বৈশ্বিক পুঁজিবাদ একটি সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তখন আমাদের মধ্যে যারা এখনও নিজেদের “সাম্যবাদী” হিসেবে পরিচয় দেয়, তারা আসলে ডিপ্লোমাধারী “উদারপন্থী” ভিন্ন কিছু নয়। এমন ধাঁচের “উদারপন্থী” যারা গুরুত্তের সাথে অধ্যয়ন করেন কেন তাদের উদারনৈতিক মূল্যবোধগুলো সঙ্কটের মুখে এবং বুঝতে পারেন একটি আমূল পরিবর্তনই কেবল তাদের বাঁচাতে পারে।